আমার সম্পর্কে

আমার ফটো
Bangladesh
M.A. in English Literature under National University. My Home District in Comilla.

বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৬

জমাট বাধা সুখ

ভাবিনি দেখা হবে আবার
ভাবনাটা আসতেও চায়নি কোন দিন
নিবদ্ধ ছিল পাহাড়ের গায়ে.....
হাজার হাজার ভাবনার এক বিশাল সমারোহ
মেঘেদের উপর তলায় ঘাপটি মেরে ছিল
দীর্ঘ এগার বছর।
দেখেছে অনেক সত্য-অসত্যের নিখুঁত কর্ম
বাদ যায়নি ছোট ছোট মুহূর্ত গুলো
সেই যে ফেলে আসা প্রথম জীবনের চোর-ডাকাত খেলা
দেশলাইর প্যাকেটের একশো-দু'শো তাস
সিমের বিচির জোড়-বেজোড়
আর জোড় বেধে সাপ-লুডুর বর্ষা ঋতু।
ভাবনাটা খেলে যায় বার বার
ধরা দেয় প্রতিটা মুহূর্তে
ধরনীর শুষ্ক হাহাকার জানান দেয় অতীত বিয়োগ।
যদি আবার হতো দেখা
আবার যদি হতো সেই সোনালি আলিঙ্গন।
স্মৃতির পাহাড় বেয়ে যখন ক্লান্ত এক প্রাণ
পাঁজর ভাঙ্গা চিৎকারে হাত তুলে অপেক্ষমান
ঠিক তখনই দূর থেকে ভেসে এলো মিলন মেলার ডাক।
একত্র হওয়ার ডাক
আজ আবার একত্র হয়েছি দেখবো বলে
আজ আবার একত্র হয়েছি বলবো বলে
আজ আবার একত্র হয়েছি শুনবো বলে
আজ আবার একত্র হয়েছি বন্ধন মূলে
এ বন্ধন চিরকালের অমোঘ পাথেয়
এ বন্ধন সংঘবদ্ধ জীবনের বাস্তবতা
এ বন্ধন অতীতকে ফিরে পাওয়ার হাতিয়ার
এ বন্ধন বন্ধুত্বের কোমল স্বীকৃতি
এ বন্ধন ভুলে যাওয়া স্মৃতির পুনরুথ্যান।
এ বন্ধন আমার
এ বন্ধন তোমার
এ বন্ধন সবার
এ বন্ধন চিরকাল একে অন্যের পাশে থাকার বন্ধন।

২৭শে আগষ্ট ২০১৬

জোৎস্না খাওয়ার রাত

কত জায়গায় কত খেলাম
কত কিছুর মজা নিলাম
ঘরের খাবার পরের খাবার
স্বজন প্রীতির ডজন খাবার
বনের খাবার জলার খাবার
লাল প্রেমিকার ঠোটের খাবার
হাজার কূলের হাজার খাবার
আমার পেটের ধন।
তবু আমার পেটে যেন চলছে অনটন।
আজকে আমার খাবার দেখি আসমানেতে সাটা
এত দূরের খাবার খেতে কেমনে বাড়াই পা টা।
ধীর পায়েতে হেটে হেটে পুকুর ঘাটে এসে
জোৎস্না খাওয়ার পণ করেছি জলের ধারে বসে।
নিত্য দিনের নিয়ম ভাঙ্গার নতুন অজুহাত
কে আমাকে রুখতে পারে
আজকে আমার জোৎস্না খাওয়ার রাত।

শশুর বাড়ির পোয়া পিঠা এই কপালের ধন
যদিও বা পাই কোন দিন খাবো কতক্ষন।
জেলের খাবার নলার খাবার
চুলার খাবার ধূলার খাবার
চা দোকানের চুটকি খাবার
ফিরনী খাওয়ার স্বাদ জাগে না জোৎস্না খাওয়ার লোভে
আজকে সকল জোৎস্না শুধুই আমার খাবার হবে।

একটু খানি টিফিন ভরে রোজ সকালে ছুটি
ভাত-রুটির ঐ জটলা খাবার ধরছে চেপে টুটি।
ডালের ফুরুৎ ডিমের পোজে জীবন ফানাফানা
আজকে আমি জোৎস্না খাবই যে যাই করুক না না।

এমন খাবার এটাই প্রথম জন্ম-বংশ-কুলে
খাবই খাব যতই থাকুক আমার প্রতিকূলে।
খেজুর রসে ভাপা পিঠা
জ্বালে জ্বালে বাড়ে মিঠা
চিতই পিঠা সেপাই পিঠা
পাটিশাপটার পরে
ঝলসানো এই চাঁদের পিঠা আজকে আমার ঘরে।
এই পিঠাতে জোৎস্না ঝরে আকুল করে প্রাণ
আজকে আমি জোৎস্না খাব সমুদ্র সমান।

১৪-১১-২০১৬

এক পক্ষ

আমার জোৎস্না মাখা ঘাটে
তোমার আদরই সম্বল,
আমার মলিন দুটি হাতে
তোমার মাখা চোখের জল।
আমার একটা বাহুর বেড়ে
তোমার গুটিয়ে সুখ নেয়া,
আমার একটা মুখের কথায়
তোমার এত দূরে যাওয়া!
আমার অস্থায়ী এক ঘরে
তুমি দেখতে পাঠাও খোঁজ
আমার স্ফূর্তি হত এমন
তুমি আসতেও চাও রোজ।
আমার বেলাল্লা বে-সুরে
তোমার নাম নিয়েছি কত,
আমার চরম হাসি দেখে
তুমি বকতে অবিরত।
আমি আজকে সাদা রাতে
তোমায় একটু আশা করি,
আমার একলা একা ঘাটে
তুমি বেয়ে আসো তরি।
আমার পাশেই তুরাগ বহে
তুমি বয়ে এসো আজি
আমি দাঁড়ায়েছি হেথা
আসো চাঁদের সোজাসুজি।
আমি ডানপাশেতে বসে
তোমার গান শুনিব ধীরে,
তুমি চাঁদকে ক্ষানিক দেখে
আবার দেখবে আমায় ফিরে।
এমন পূর্নিমারই রাতে
তোমার গভীর চোখে চাওয়া,
যেটা এখনব্দী আমার
একটা শ্রেষ্ঠ সময় পাওয়া।

আজ তেমনই এক রাতে
তোমায় স্মরণ করে ভাবি,
তোমার মধুর সময় এখন
আমি সময়ের অভাবী।
১৫-১১-২০১৬

ভৌতিক ল্যাম্বপোস্ট

ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে
যখন পূর্বাকাশে চাঁদ
একটু নিচু হয়ে আড়াল হয়েছে গাছের মাথায়।
সামনে জলাধার
তারপরে তিনটি নারকেল গাছ এক সাড়িতে
যেন তিনটি ছায়া মূর্তি।
তাদের অবয়ব প্রতিচ্ছবি জলের গায়ে।
শুধু নিজেকে দেখতে পাই না আর।
হঠাৎ জলে ডালপড়া শব্দ মনে ভয় ধরিয়ে দিল।
মনে হল সাপ থেকে মাছের বাঁচার যুদ্ধ।
ডালপড়ার ঢেউ ধীরে ধীরে প্রতিচ্ছবি ছুঁলো
সোজা দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিচ্ছবিগুলো ঢুলতে লাগলো
আর ডাকতে থাকল আপন মনে।
আসো, আসো তুমি
এক সাড়িতে দাঁড়াই
শুশৃঙ্খল ভাবে দাঁড়াই
এক সাড়িতে নাচি ঢেউয়ের তালে
তুমি ঐপাড়ে একা নাচছো।
হয় না,
এপাড়ে আসো জোড়া মিলাই।
তুমি আসবে বলে সেই সন্ধ্যা থেকে চাঁদ মাথায় করে দাঁড়িয়ে।
একটুও নড়তে দেইনি অন্ধকারের ভয়ে।

ঝপ করে শব্দ হলো
ভয়ে আৎকে উঠলাম
পানি থেকে উঠে আসছে সাপ।
মস্তবড় সাপ আমায় গিলে খেতে চায়।
আমি এক পা দু'পা করে পিছনে এসেই দৌড়।
সোজা বাসার গেটে।
পিছন ফিরে দেখি আড়াল করা চাঁদটা
ল্যাম্বপোস্ট।
১৬-১০-২০১৬