আমার সম্পর্কে

আমার ফটো
Bangladesh
M.A. in English Literature under National University. My Home District in Comilla.

বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৬

জমাট বাধা সুখ

ভাবিনি দেখা হবে আবার
ভাবনাটা আসতেও চায়নি কোন দিন
নিবদ্ধ ছিল পাহাড়ের গায়ে.....
হাজার হাজার ভাবনার এক বিশাল সমারোহ
মেঘেদের উপর তলায় ঘাপটি মেরে ছিল
দীর্ঘ এগার বছর।
দেখেছে অনেক সত্য-অসত্যের নিখুঁত কর্ম
বাদ যায়নি ছোট ছোট মুহূর্ত গুলো
সেই যে ফেলে আসা প্রথম জীবনের চোর-ডাকাত খেলা
দেশলাইর প্যাকেটের একশো-দু'শো তাস
সিমের বিচির জোড়-বেজোড়
আর জোড় বেধে সাপ-লুডুর বর্ষা ঋতু।
ভাবনাটা খেলে যায় বার বার
ধরা দেয় প্রতিটা মুহূর্তে
ধরনীর শুষ্ক হাহাকার জানান দেয় অতীত বিয়োগ।
যদি আবার হতো দেখা
আবার যদি হতো সেই সোনালি আলিঙ্গন।
স্মৃতির পাহাড় বেয়ে যখন ক্লান্ত এক প্রাণ
পাঁজর ভাঙ্গা চিৎকারে হাত তুলে অপেক্ষমান
ঠিক তখনই দূর থেকে ভেসে এলো মিলন মেলার ডাক।
একত্র হওয়ার ডাক
আজ আবার একত্র হয়েছি দেখবো বলে
আজ আবার একত্র হয়েছি বলবো বলে
আজ আবার একত্র হয়েছি শুনবো বলে
আজ আবার একত্র হয়েছি বন্ধন মূলে
এ বন্ধন চিরকালের অমোঘ পাথেয়
এ বন্ধন সংঘবদ্ধ জীবনের বাস্তবতা
এ বন্ধন অতীতকে ফিরে পাওয়ার হাতিয়ার
এ বন্ধন বন্ধুত্বের কোমল স্বীকৃতি
এ বন্ধন ভুলে যাওয়া স্মৃতির পুনরুথ্যান।
এ বন্ধন আমার
এ বন্ধন তোমার
এ বন্ধন সবার
এ বন্ধন চিরকাল একে অন্যের পাশে থাকার বন্ধন।

২৭শে আগষ্ট ২০১৬

জোৎস্না খাওয়ার রাত

কত জায়গায় কত খেলাম
কত কিছুর মজা নিলাম
ঘরের খাবার পরের খাবার
স্বজন প্রীতির ডজন খাবার
বনের খাবার জলার খাবার
লাল প্রেমিকার ঠোটের খাবার
হাজার কূলের হাজার খাবার
আমার পেটের ধন।
তবু আমার পেটে যেন চলছে অনটন।
আজকে আমার খাবার দেখি আসমানেতে সাটা
এত দূরের খাবার খেতে কেমনে বাড়াই পা টা।
ধীর পায়েতে হেটে হেটে পুকুর ঘাটে এসে
জোৎস্না খাওয়ার পণ করেছি জলের ধারে বসে।
নিত্য দিনের নিয়ম ভাঙ্গার নতুন অজুহাত
কে আমাকে রুখতে পারে
আজকে আমার জোৎস্না খাওয়ার রাত।

শশুর বাড়ির পোয়া পিঠা এই কপালের ধন
যদিও বা পাই কোন দিন খাবো কতক্ষন।
জেলের খাবার নলার খাবার
চুলার খাবার ধূলার খাবার
চা দোকানের চুটকি খাবার
ফিরনী খাওয়ার স্বাদ জাগে না জোৎস্না খাওয়ার লোভে
আজকে সকল জোৎস্না শুধুই আমার খাবার হবে।

একটু খানি টিফিন ভরে রোজ সকালে ছুটি
ভাত-রুটির ঐ জটলা খাবার ধরছে চেপে টুটি।
ডালের ফুরুৎ ডিমের পোজে জীবন ফানাফানা
আজকে আমি জোৎস্না খাবই যে যাই করুক না না।

এমন খাবার এটাই প্রথম জন্ম-বংশ-কুলে
খাবই খাব যতই থাকুক আমার প্রতিকূলে।
খেজুর রসে ভাপা পিঠা
জ্বালে জ্বালে বাড়ে মিঠা
চিতই পিঠা সেপাই পিঠা
পাটিশাপটার পরে
ঝলসানো এই চাঁদের পিঠা আজকে আমার ঘরে।
এই পিঠাতে জোৎস্না ঝরে আকুল করে প্রাণ
আজকে আমি জোৎস্না খাব সমুদ্র সমান।

১৪-১১-২০১৬

এক পক্ষ

আমার জোৎস্না মাখা ঘাটে
তোমার আদরই সম্বল,
আমার মলিন দুটি হাতে
তোমার মাখা চোখের জল।
আমার একটা বাহুর বেড়ে
তোমার গুটিয়ে সুখ নেয়া,
আমার একটা মুখের কথায়
তোমার এত দূরে যাওয়া!
আমার অস্থায়ী এক ঘরে
তুমি দেখতে পাঠাও খোঁজ
আমার স্ফূর্তি হত এমন
তুমি আসতেও চাও রোজ।
আমার বেলাল্লা বে-সুরে
তোমার নাম নিয়েছি কত,
আমার চরম হাসি দেখে
তুমি বকতে অবিরত।
আমি আজকে সাদা রাতে
তোমায় একটু আশা করি,
আমার একলা একা ঘাটে
তুমি বেয়ে আসো তরি।
আমার পাশেই তুরাগ বহে
তুমি বয়ে এসো আজি
আমি দাঁড়ায়েছি হেথা
আসো চাঁদের সোজাসুজি।
আমি ডানপাশেতে বসে
তোমার গান শুনিব ধীরে,
তুমি চাঁদকে ক্ষানিক দেখে
আবার দেখবে আমায় ফিরে।
এমন পূর্নিমারই রাতে
তোমার গভীর চোখে চাওয়া,
যেটা এখনব্দী আমার
একটা শ্রেষ্ঠ সময় পাওয়া।

আজ তেমনই এক রাতে
তোমায় স্মরণ করে ভাবি,
তোমার মধুর সময় এখন
আমি সময়ের অভাবী।
১৫-১১-২০১৬

ভৌতিক ল্যাম্বপোস্ট

ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে
যখন পূর্বাকাশে চাঁদ
একটু নিচু হয়ে আড়াল হয়েছে গাছের মাথায়।
সামনে জলাধার
তারপরে তিনটি নারকেল গাছ এক সাড়িতে
যেন তিনটি ছায়া মূর্তি।
তাদের অবয়ব প্রতিচ্ছবি জলের গায়ে।
শুধু নিজেকে দেখতে পাই না আর।
হঠাৎ জলে ডালপড়া শব্দ মনে ভয় ধরিয়ে দিল।
মনে হল সাপ থেকে মাছের বাঁচার যুদ্ধ।
ডালপড়ার ঢেউ ধীরে ধীরে প্রতিচ্ছবি ছুঁলো
সোজা দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিচ্ছবিগুলো ঢুলতে লাগলো
আর ডাকতে থাকল আপন মনে।
আসো, আসো তুমি
এক সাড়িতে দাঁড়াই
শুশৃঙ্খল ভাবে দাঁড়াই
এক সাড়িতে নাচি ঢেউয়ের তালে
তুমি ঐপাড়ে একা নাচছো।
হয় না,
এপাড়ে আসো জোড়া মিলাই।
তুমি আসবে বলে সেই সন্ধ্যা থেকে চাঁদ মাথায় করে দাঁড়িয়ে।
একটুও নড়তে দেইনি অন্ধকারের ভয়ে।

ঝপ করে শব্দ হলো
ভয়ে আৎকে উঠলাম
পানি থেকে উঠে আসছে সাপ।
মস্তবড় সাপ আমায় গিলে খেতে চায়।
আমি এক পা দু'পা করে পিছনে এসেই দৌড়।
সোজা বাসার গেটে।
পিছন ফিরে দেখি আড়াল করা চাঁদটা
ল্যাম্বপোস্ট।
১৬-১০-২০১৬

শনিবার, ২ জুলাই, ২০১৬

হারিয়ে যাবার আগে

আমি হারিয়ে যাবার আগে হারাতে চাই সবার আনন্দে।
আমি ব্যর্থ হওয়ার আগে সবার সফলতা দেখতে চাই।
আমি দুঃখ পাওয়ার আগে সবার সুখ দেখতে চাই।
আমি কান্না করার আগে সবার হাসি দেখতে চাই।

আমি ব্যর্থ হলে হারিয়ে যাব।
আমি ব্যর্থ হলে দুঃখ পাব।
আমি দুঃখ পেলে কান্না করবো।
কিন্তু সবার সফলতা,
সবার সুখ,
সবার হাসিই আমার খোরাক।
আমি হারিয়ে যাবার আগে সবার ভালগুলিই আমাকে হারিয়ে যেতে বাধা দেয়।
আমি কোথায় যাব এই মুখগুলি ছেড়ে।

২০-০৫-২০১৬

আমি তোমার শান্তনা

চাষীর মনে স্বস্তি, অঝোর বৃষ্টি এলে
রাত প্রহরীর স্বস্তি ভয়ের রাত ফুরোলে
সুখ তারাদের সুখ কি সুখের স্বপ্ন বোনা
তুমি কি জানো আমি তোমার শান্তনা।


পায়রা উড়ে যাচ্ছে দূরে বিশ্বাস আছে তার
যত দূরেই যাক সে ফিরে আসবে আবার
মৌমাছিরা মধু নিতে কত দূরে যায়!
তবু তারা ফিরে আসে পথ না হারায়
বিশ্বাস আছে না কি নাই তুমি জানো না
তুমি কি জানো আমি তোমার শান্তনা।

অভিমানে দুঃখ বাড়ে কান্না থামেনা
কান্না হলো দুঃখ ঘুচার মিথ্যা শান্তনা
আবার তুমি আসবে ফিরে এইতো কামনা
তুমি কি জানো আমি তোমার শান্তনা।

৩০-০৫-২০১৬

তারে ভাবলে কি আর পাব আমি

তারে ভাবলে কি আর পাব আমি
না এলে সে অন্দরে
(ও সে) ডুব মারিয়া বসে আছে গোপন পথ ধরে।

নানান ভাবে বুঝাতে চাই
নানান কথ্য ভাষে
আসল কথা হয় না বলা আপন সাহসে (আমার আপন সাহসে)
যখনই যাই বলতে তারে জিভের ডগা না নড়ে।


এই ক'টা দিন একলা ভীষন
নিজেই নিজের করছি শাসন
বুঝ মানাতে মনটারে।
বুঝের মানুষ অবুঝ হলাম ভাবছি কেমন করে।
আমার না বলা সেই প্রলাপ আজো
যত্নে আছে মন্তরে।

১৫-০৬-২০১৬

প্লীজ

সেই রাতে পূর্ণিমা ছিল না
গুমুটভাব ছিল আকাশে
খুব ক্লান্ত শরীর আমার।
সারাদিন মেজাজ বিগড়ে যাওয়া হাড়খাটুনি।
কাপড় ছেড়ে যখন বিছানায়
খুব একা লাগল নিজেকে
মনে পড়ল তোমার কথা
কাঁপা ঠোটে বললাম 'ভালবাসি'
হাসিমাখা ঠোটে ফিরিয়ে দিলে
নিঃসঙ্গ জীবনে সঙ্গী হলে না
পূর্ণিমা এল না আর
মনের গুমুট ভাবটা এখনো কাটেনি
এখনো ভাবি তোমার হাস্যোজ্জল ঠোট -
কত স্বচ্ছ!
কত স্পষ্ট উচ্চারনে বলে ফিরানোর কথা!
দ্বিতীয়বার শোনার দরকার নেই
শুধু স্পষ্ট উচ্চারনটা শুনতে ইচ্ছে করে
স্পষ্ট উচ্চারনটা শিখানোর জন্যওকি আমার সঙ্গী হবে না
আচ্ছা, তোমার কি সব সময়ই পূর্ণিমা?
কখনও যদি গুমুট ভাব আসে
মনের অজান্তেই ভেব আমায়।
আমি দেখা করবো গভীর রাতে
জড়িয়ে ধরে বলবো 'ভালবাসি'
অনেক 'ভালবাসি' তোমায়।
আমার পূর্ণিমা তোমার জন্যে।
আমার গুমুটভাব দূর করে দাও।
আমি মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবো তোমার বুকে।

৩০-০৬-২০১৬

সোমবার, ২০ জুন, ২০১৬

না, আমি ইতিহাস বলতে আসিনি

না, আমি ইতিহাস বলতে আসিনি
বাস্তব উপলব্ধিকে শুধু অনূভব করতে এসেছি।
আমার ক্ষুদ্র মনের সূক্ষ্ম অনুভূতি আজ জানিয়ে দেয়
নারী আমার অহংকার
নারী আমার প্রেরণা
নারী আমার শক্তি
নারী আমার আগমনী গান শোনাবার শ্রেষ্ঠ সাথী।
যে নরের দিনটা শুরু নারীর ছোঁয়ায়
যে নরের রাতটা শুরু নারীর ছোঁয়ায়
যে নরের অমূল্য সব কীর্তি আসে নারীর ছোঁয়ায়
সে নারী আজকে আমার মনের বাগান
সে নারী আজকে আমার

উন্নতি চিবিয়ে খাব

গতানুগতিক জীবনের দীর্ঘ পথে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে একটু ছায়া খুঁজি।
অতঃপর মস্তবড় আকাশের নিচে ছোট্ট একটি গাছ দেখে তার ছায়ায় আশ্রয় নিই।
একটু জিরিয়ে আবার শুরু হয় সেই দীর্ঘ পথের যাত্রা।
আবার হাঁটতে থাকি অজানার উদ্দেশ্যে।
ভাবতে থাকি সঞ্চয়ের সফলতায় উপচে পড়া দেশের উন্নতি।
হঠাৎ থমকে দাঁড়াই।
কে যেন পিছন থেকে এসে জাপটে ধরে বলে, - আর যেও না।
আমি স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে যাই।
আর শুনতে থাকি, আমার দরিদ্র মাতার আটশো কোটি টাকা লুট হয়ে যাওয়ার করুন খবর।
আমি নির্বাক হয়ে বসে পড়ি।
অশ্রু ছেড়ে দেয়া চোক্ষু যুগল বন্ধ হয়ে আসে।
আমার স্বাভাবিক নিঃশ্বাস ধীরে ধীরে বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
মিনিট দশেক পর সাহস নিয়ে উঠে দাঁড়াই।
অশ্রু মুছে মুষ্ঠি বদ্ধ হাতে চিৎকার করে বলি,-
আমার টাকা ফিরিয়ে দে,
নয়তো উন্নতি চিবিয়ে খাব।


১৬ই মার্চ ২০১৬

উন্নত মস্তিষ্ক

একটু দাঁড়া! চলে যাওয়া মানে সমাধান নয়,
চলে যাওয়া মানে একা হওয়া নয়,
চলে যাওয়া মানে নিজেকে ভুল প্রমান করে অন্যের শাষনকে প্রশ্রয় দেয়া।
নিজেকে বোঝ,
মনের অলংকার দিয়ে সাজানো প্রথম প্রপোজ
জীবন্ত থাকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
পরে থাক, আমি বলছি না,
দূরে থাক, সেও কাম্য না,
ভুলে থাক, সেটা পারবি না।
তোর ইচ্ছার প্রতিটি পাতা আজ তার নামে জলছাপ দেয়া।
তোর চাওয়ার অফুরন্ত মাধ্যম তার চোখে নিবিষ্ট।
তোর ঘুমের ছায়া সঙ্গী আজ যেই মানুষটি,
সে আর কেউ নয়,
তোরই মত নিস্ফল ভাবনায় কাতর এক ক্ষনজন্মা।
এ এক কাকতালিয় অভিনয়।
ফিরে আয়,
ফিরে আয়,
বাস্তব তোর অপেক্ষায়।

১৮/০৩/২০১৬

আব্রু সহিত লজ্জা

আব্রু সহিত লজ্জা ঢাকার উজ্জল চরিত্র
নয়নের ধারে চলমান লজ্জা কে ঢাকবে
কে দূর করবে আব্রু সহিত চক্ষু লজ্জার অভাব
যে লজ্জা আজ আমাদের জাতীয় সমস্যা।
লজ্জাকে ঢাকার জন্য লজ্জিত হওয়া নয়
লজ্জাকে ঢাকার জন্য বক্তৃতা স্লোগান নয়
লজ্জাকে ঢাকার জন্য লাল বেনারসিও নয়
লজ্জাকে আমাদের মনে ধারন করতে হবে।
তনুদের সম্ভ্রমহানি, হত্যা আমাদের জাতীয় সমস্যা।
আমরা নিজেরা লজ্জিত হই
জাতি লজ্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।

২৪- ৩-২০১৬

যে বসন্ত এসেছে

যে বসন্ত এসেছে আজ মনের আঙ্গিনা জুড়ে
সে আমার নিশি রাত, কোমল প্রভাত
সে আমার হলুদ শাড়ি, কোমল দুটি হাত।
সে হাতে মালা গেঁথে খোপাতে জড়াই
আমার বসন্তে বধুর শয্যা ফুল
সে বধুর গান গেয়ে যাই।।
-
যে বসন্ত এসেছে আজ মনের আঙ্গিনা জুড়ে,
সে আমার গাধা ফুল, বেলী ও বকুল,
সে আমার বন্দনা, প্রাণেরই আকুল।
সে প্রাণে দোলা দিতে উল্কা আঁকাই
আমার বসন্তে বধুর শয্যা ফুলে,
সে বধুর গান গেয়ে যাই।।
-
যে বসন্ত এসেছে আজ মনের আঙ্গিনা জুড়ে,
সে আমার গাছের পাতা, মায়াময়তা,
সে আমার নতুন কুড়ি, ছন্দ কথা।
সে কথার রেশ টেনে তোমার ঠোঁটে আলতো ছোঁয়াই,
আমার বসন্তে বধুর শয্যা ফুলে
সে বধুর গান গেয়ে যাই।।
-
১৩ই ফেব্রুয়ারী ২০১৬. টঙ্গী, গাজীপুর।

কাজের ফাঁকে বিনোদন

বড্ড চাপে সারা দিন
অফিস করি বিরামহীন
একটু না পাই শান্তি।
তারপরেও মাঝে মাঝে
দুষ্টু কথার জোয়ার আসে
হেসে কাটাই ক্লান্তি।


কথার রাজা নওয়াজ শরিফ
কথায় কামায় নানান তারিফ
একশো তোলা বুদ্ধি।
জিতে যাবে কথার প্যাঁচে
যতই ধরুন চেপে চুপে
কলার বা চৌহদ্দি।

কেষ্ট নিয়াজ বড্ড পাজি
ডিস্ক ঘুরাতে মহা রাজি
যশোহরের শয়তান।
মধ্য রাতে চশমা চোখে
তিন তরিকার ছবি দেখে
মুশকিল করে আসান।

আরো তিনটা শয়তান আছে
কাউছার বসে আমার পিছে
সানি বসে উপ্রে।
সজিবটা রোজ পাশে বসে
পাকনা কথায় মিনকা হাসে
চালাক একটা, বাপ্রে।

তাদের কিছু দুষ্টু লোকে
গালিব ভাইয়ের নাকে মুখে
একশো করে প্রশ্ন।
বেচারাটার নাই যে উপায়
ঠান্ডা মাথায় সব সয়ে যায়
চরিত্র অনন্য।

এমনই সব বিনোদনে
অফিস করি সারাদিনে
একটু না হই ক্লান্ত।
মনে মনে ভাবতে থাকি
এই বিনোদন চলবে, নাকি
হয়ে যাবে ক্ষান্ত।

২৫-৩-২০১৬

লাল কেরি

লাল কেরিরে লাল কেরি
আসতে না করিস দেরি।
হঠাৎ আসিস কোথ্ থেকে
রেল গাড়িটির ঘোরপাকে।
জংশন তোর কোন খানে
চুপটি মেরে বল কানে।
বলবো না তা বলবো না
কাউকে আমি বলবো না।
দিব্যি দিলাম হাত তুলে
বলতে পারিস মন খুলে।


লাল কেরিরে লাল কেরি
খাইবি নাকি তরকারি।
লাল টমেটোর চচ্চরি
ছোট্ট মাছের ঝুরঝুরি।
আরো আছে লাল গাজর
কেউ দিবে না এক নজর।
ইচ্ছে মত খাইবি তুই
ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা দই।

লাল কেরিরে লাল কেরি
পড়বি নাকি হাত ঘড়ি।
চশমা দিব একখানা
বলনা রে তোর আস্তানা।
দেখবো আমি তোর জগৎ
জন্ম, মৃত্যু, হায়াত-মউত।

লাল কেরিরে লাল কেরি
আবার এলি সখ করি।
কেন এলি তুই আবার?
সময় যে নেই আর বাঁচার।

লাল কেরিরে লাল কেরি
তুরাগ নদী পাড় করি,
নিয়ে যাব উত্তরা
হইস না রে তুই মনগরা।
ভূতের আড্ডা হবে শোন
শুনবি দিয়ে প্রাণমন।
ভয় পাবি না একটুও
চোখ যাবে না কোথাও।
আর যদি তোর লাগে ভয়
আমাকে যে বলতে হয়,
কোথায় গড়া আস্তানা
দেখবো শুধু, বলবো না।
দিচ্ছি কথা হাত তুলে
বলতে পারিস মন খুলে।

২২-০৩-২০১৬
টঙ্গী, গাজীপুর।

আমার নিবাস

ছোট্ট একটা বনের ভিতর আমার বসবাস
আমি থাকি একাই থাকি একান্ত নিবাস।
লাল কেরিরা ঘুমায় এখন আমার বিছান তলে
মশারা রোজ ব্যাস্ত থাকে গীত আর গজলে।
সুরেলা সেই গীত-গজলে দর্শক আর নাই
আমিই তাদের ভক্ত শ্রোতা সুরেরই গঙ্গায়।
আমার পাশে ছোট্ট বনে সাপের আনাগোনা
একটু ঘুমাই একটু আবার ভয়েরই আল্পনা।
বিছা আছে, কেঁচো আছে টিকটিকিও বেশ
কুনো ব্যাঙের ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর নিত্য নিরাবেশ।
কুনো ব্যাঙের তবলা বাদন মশার সুরে মিশে
আমাকে রোজ দেয় ভাসিয়ে সুরের আবেশে।
গান পাগলের কষ্ট করে শুনতে হয় না গান
চারপাশের এই নিত্য গানই ব্যাপক অফুরান।


০৬/১১/২০১৫

বোধগম্য

আজ আবার তার সাথে দেখা।
মেইন গেইট দিয়ে মেয়েটি একা
একা ভিতরে ঢুকছে। তখন আমি
লুঙ্গি পড়ে হাটছি আর আগামী
ক্লাসের পড়া দিতে পারব কি না
তাই নিয়ে ভাবছি। বড় আনমনা
ছিলাম। এ অবস্থায় সামনে একটু
তাকালাম। দেখলাম লাজুক দুষ্টু
মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে টিপ
টিপ করে হাসছে। হাসির টপিক
প্রথমে বুঝতে পারি নি। ঘাটের
দিকে হাটছি। সেও পিছনে রাতের
চিক চিক আলোয় আসছে। পরে
তার নজর ঠাহর করতে পেরে
বুঝলাম সে আমার লুঙ্গি দেখে হাসছে।


24-04-2016

শান্তনা

শামিম চাইছে ফিরি খাইতে কবিরও চায় ফিরি
আমার এখন দেয়ার আছে শুধুই আকিজ বিড়ি।
কিন্তু তারা ভদ্দর লোক বিড়ি নাহি খায়
মে দিবসের সুন্দর একটা টিশার্ট তারা চায়।
আমি একটা ফিরি পাইছি কারে দিমু আগে
কেমনে তাদের দুইজনারে নিয়া আসমু বাগে।
অবশেষে বুদ্ধি দিল শামিম খলিফায়
তারা দুইজন ক্ষান্ত দিব ফিরি কবিতায়।
দুইজনেরে শান্ত করতে লিখিলাম তারে
এখন তারা অনেক খুশি জগত মাঝারে।


৩০ -০৪-২০১৬

বালুর আঘাত

আমার এলোমেলো দাঁড়ানো চুল
যেন, আমি যেন নই অনুকূল।
যেন বাবুই পাখির সদ্য নিয়ে আসা খরকুটো।
বাসা বানাবে, থাকবে ছোট্ট একটা ফুটো।
যাকে আমরা সচরাচর দরজা বলি।
আমাকে জিজ্ঞেস করলে হেসে বলি
বৈশাখী ঝরের তীব্র আঘাতে তারা নাস্তানাবুদ।
তাদের প্রটেক্ট করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা।
সে কি চেষ্টা!
হাত থেকে শুরু করে পাতলা পলিথিন
কোনও কিছুই অবশিষ্ট থাকলো না।
অবশেষে একটা একচালা ঘরে আশ্রয়।
সেখানে কালো মতন বোরখা পড়া এক সুন্দরী মহিলা বসে।
আমি বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় পাশের চেয়ারে।
মাথায় আমার বালুর পাহাড়।
কি করার আছে আর।
শেষমেষ বালুই খেল চুলের সৌন্দর্য।


০২-০৪-২০১৬

নারকেল সুন্দরী

নির্জন পুকুর ঘাটে আমি একা
দূরে কয়েকটি বাতির নির্লজ্জ জ্বলন
চৌদ্দটি নারকেল গাছে ঘেরা পুকুর
মাঝখানে ভাসমান সাদা ককসিট
চাঁদের ফুটন্ত আলো ককসিটের পিঠচুলকে দিচ্ছে।
আমি ছিলাম ঘাটের ডানদিকটায়
যেখান থেকে চাঁদ এবং জ্বলন্ত বাতির আলো একসাথে খেলা করে।
তারপর যেতে যেতে যেতে
শুনছিলাম জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়-এর আবৃত্তি।
লম্বা চুল এলিয়ে বসে থাকা রাক্ষসীর গল্প।
যে খেয়েছিল তাকে।
শুনতে শুনতে আমি সামনে তাকালাম।
দেখলাম একটা নারকেল গাছের মাথায় লম্বা চুল
নিচে উন্মুক্ত ঢাসা বক্ষযুগল
যেন ভুটানের সর্বোচ্চ মূর্তির স্ফটিক বক্ষ
আমায় করল নমস্কার
স্বাগত জানাল তার বিশাল সাম্রাজ্যে।
পরিচয় করিয়ে দিল তার পূর্বপুরুষদের।
বিদায়ে বলল, "আবার এসো অমনি দিনে"।
আবার তাকালাম নারকেল গাছের দিকে।
দেখলাম লম্বা চুলওয়ালী নমস্কারের বদলে সমস্ত খেতে চায়।
আমাকে খেতে চায়,
পিষে খেতে চায় আমার সমস্তকিছু।
যেতে যেতে যেতে খেতে চায়
আর টানতে চায় গল্পের সমাপ্তি।


০৩-০৫-২০১৬
আমি হারিয়ে যাবার আগে হারাতে চাই সবার আনন্দে।
আমি ব্যর্থ হওয়ার আগে সবার সফলতা দেখতে চাই।
আমি দুঃখ পাওয়ার আগে সবার সুখ দেখতে চাই।
আমি কান্না করার আগে সবার হাসি দেখতে চাই।

আমি ব্যর্থ হলে হারিয়ে যাব।
আমি ব্যর্থ হলে দুঃখ পাব।
আমি দুঃখ পেলে কান্না করবো।
কিন্তু সবার সফলতা,
সবার সুখ,
সবার হাসিই আমার খোরাক।
আমি হারিয়ে যাবার আগে সবার ভালগুলিই আমাকে হারিয়ে যেতে বাধা দেয়।
আমি কোথায় যাব এই মুখগুলি ছেড়ে।

২০-০৫-২০১৬
তারে ভাবলে কি আর পাব আমি
না এলে সে অন্দরে
(ও সে) ডুব মারিয়া বসে আছে গোপন পথ ধরে।

নানান ভাবে বুঝাতে চাই
নানান কথ্য ভাষে
আসল কথা হয় না বলা আপন সাহসে (আমার আপন সাহসে)
যখনই যাই বলতে তারে জিভের ডগা না নড়ে।


এই ক'টা দিন একলা ভীষন
নিজেই নিজের করছি শাসন
বুঝ মানাতে মনটারে।
বুঝের মানুষ অবুঝ হলাম ভাবছি কেমন করে।
আমার না বলা সেই প্রলাপ আজো
যত্নে আছে মন্তরে।

১৫-০৬-২০১৬

বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

অবেলার খেলা



জগদীশ জেগে থাক,
চেয়ে থাক চক্ষু ফুরে,
খেলার শেষ খেলা হোক,
তোর গহীন চরে
জগদীশ দিক বদলা,
বেড় দে খেলোয়ার সব,
কেউ যেন পায় না ছাড়া,
ঢেকে ফেল সারা অবয়ব
জগদীশ দেরী নয় আর,
কই তুই সাঁঝের বেলা,
তেড়ে আয় ষাঁড় হয়ে আয়,
শেষ কর সাধের খেলা
জগদীশ জোরে হাট,
লম্বায় দশ হাত তুই,
কত আর খেলবিরে বল,
বাড়ি চল বেলা ডুবে
জগদীশ জাতের পাজি,
বংশের একরোখা লোক,
বয়সের ভাড় নাই তার,
সে চায় খেলাটি চলুক
জগদীশ যুদ্ধে নামে,
এই তার সাধের খেলা,
খেলার শেষ নাহি চায়,
খেলা চলে বেলা-অবেলা

২৫ জানুয়ারি ২০১৬

তেজপাতা



শুকনা পাতা উচুর-মুচুর মর্মরাইয়া শব্দ করে  
শুকনা পাতা ফুসলিয়েদেয় উচুঁ শিখায় আগুনেরে  
শুকনা পাতায় বিছনা পাতায় আরাম আনে ঘুমের ঘরে 
শুকনা পাতায় ছাউনী টানায় পূর্নতা দেয় ঘরখানারে 
তেজপাতাও শুকনা পাতা মর্মরাইয়া হয় না ধ্বনি 
তেজপাতারা তেজের ভাড়েই অনলে নয় সঞ্জিবনী  
তেজপাতারা বিছনা পাতায় দেয় না আরাম ঘুমপাড়ানি 
তেজপাতারা ছাউনী পাতায় অচল অধিক শতখানি  
একটা গুনেই তেজপাতারা হয় না শামিল এক কাতারে 
নিজের গুনে গুনান্বিত তেজপাতারা পাকের ঘরে 
তেজপাতারা ঘ্রান বিলিয়ে খাবারে দেয় স্বাদের বাহার  
গুনে গুনে তেজপাতারা কদর শুনে হাজার হাজার
*********
তেজপাতারা কোথায় তোরা শুনে যারে বাস্তবতা 
 ঘ্রানের ঝাপি খুলতে হলে আনতে হবে শুকনা পাতা 
 শুকনা পাতার অনলে তুই সিদ্ধ হবি জলের সাথে  
তবেইনারে ঘ্রান বিলাবি স্বাদ আনিতে খাবারেতে  

২৬ জানুয়ারি ২০১৬

উপদেশ



নারী নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, আর নয়
জানি, বয়সের দোষ, তাই একটু বেশিই হয়
যত ভাবো তারে, তত বলো কথা আর কত
চারপাশে উড়ে বেড়ান পাখি গুলো একটু দেখতো
কি সুন্দর! ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়
বাসা-বাড়ি ছেড়ে দূরে, আরো দূরে যায়
খাবার আনিতে নিজের জন্য, সন্তানের জন্য,
 পরিবার-পরিজনের জন্য এক অনন্য
অধ্যায় কথা বলার এটা নিয়ে বলো,
 ভাবো, দেখ একটা পাখি কতটা গোছাল
ভোরের কুয়াশা মাথায় নিয়ে ছুটে চলে আকাশ 
পথে নিজ গৃহ ছেড়ে কেউ পায় না তার আভাস
সারা দিন খেটে-খুটে খাবার নিয়ে ফিরে গোধূলী
বেলায়, নিজ গৃহে ক্ষুধায় কাতর দুলাল-দুলালী
কখনো দুপুরের খরা রোদে একটুখানি পানিতে 
 গোসল সেরে নিয়ে আবার ছুটে খাবার আনিতে
এত সুন্দর টপিক থাকতে কেন নারী
নিয়ে পড়ে থাকা আমাদের ঘর-বাড়ি,
 শ্বশুর বাড়ি, আত্মীয়-স্বজন কত কি
হাট-বাজার, অফিস-আদালত, নায়ের মাঝি
স্কুল-কলেজ, পড়া-লেখা, পরীক্ষা-প্রস্তুতি
এসব নিয়ে কথা বলো আবেগ-অনুভূতি 
 শেয়ার করো তা নয় নারীর চোখের জ্যোতি,
 হাটার ধরন, কথার ধরন, কানের লতি,
 বুকের গড়ন আরো কত কি আসে
সব বয়সের দোষ তোমাদের মত এই বয়সে
সবাই একটু-আকটু নারীয় গবেষনা চালায়
বয়স বাড়লে অনুশোচনা বাড়ে দীর্ঘশ্বাস ছড়ায়
নিঃশ্বাস ভরে নারীকে অক্সিজেন হিসেবে নিয়ে
যৌবন শুরু করা মানুষগুলো যৌবন হারিয়ে
গেয়ে উঠে, আহঃ! একি হলো, একি হলো

২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬